আমাদের দেশ কৃষি প্রধান হওয়ার সাথে সাথে ভোটপ্রধান দেশও বটে। কারণ প্রতি বছরই দেশের কোথাও না কোথাও ভোট লেগেই থাকে। বর্তমানে আমাদের রাজ্যে চলছে পঞ্চায়েত ভোট, রাজ্য জুড়ে চলছে ভোটের কার্যাবলী। গতকাল হয়ে গেলো ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট, আগামী ১১ জুলাই তার গণনা। আমরা দেখি, ভোট দিতে গেলেই আমাদের আঙুলে লাগিয়ে দেওয়া হয় কালির ছাপ, কখনও ভেবে দেখেছেন এই কালির মধ্যে কি এমন রাসায়নিক পদার্থ থাকে যার ফলে এই কালি নখের মধ্যে কয়েকদিনের জন্য বসে যায়, সহজে ওঠেনা। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা এরই উত্তর খুঁজব।
নির্বাচন যে কোনও প্রাণবন্ত গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি, আমাদের দেশ, তার বিশাল জনসংখ্যা এবং সমৃদ্ধ গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সহ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনার জন্য অত্যন্ত গর্বিত। এই নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান যা ভোটদান প্রক্রিয়ার অখণ্ডতা নিশ্চিত করে তা হল কালি ব্যবহার।
নির্বাচনের কালি, যাকে প্রায়শই অনির্বাণ কালি হিসাবে উল্লেখ করা হয়, এটি বিশেষভাবে তৈরি একধরণের কালি যা জাল ভোটিং প্রতিরোধে একটি চিহ্ন হিসাবে কাজ করে। এটি আধা-স্থায়ী হতে ডিজাইন করা হয়েছে, তাই এটিকে ত্বক থেকে মুছে ফেলা অত্যন্ত কঠিন হয়। এই কালি বিভিন্ন সংমিশ্রণ দিয়ে তৈরী করা যেতে পারে, তবে এর প্রাথমিক উপাদান হল জলের সাথে সিলভার নাইট্রেট এর মিশ্রণ, যা এটিকে অত্যন্ত জেদি কালি হতে সাহায্য করে।
অন্যান্য খবর : পোস্ট অফিসের এই স্কিমে টাকা রাখুন, প্রতিবছর পাবেন সুদের ওপর সুদ।
ভারতীয় নির্বাচনে ব্যবহৃত কালি মূলত কর্ণাটকের মাইসোর (Mysore) এর একটি সংস্থা “Mysore Paints and Varnish” তৈরী করে থাকে, এই সংস্থা কর্ণাটক সরকারের অধীনস্থ। এটি তার উৎপাদিত কালি পৃথিবীর আরও ৩০ টি দেশে “ভোটের কালি” হিসেবে রপ্তানি করে থাকে।
বছরের পর বছর ধরে, ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI) ক্রমাগত নির্বাচনে কালির কার্যকারিতা বাড়ানোর এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার চেষ্টা করেছে। কালি মুছে ফেলার বিষয়ে উদ্বেগের প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ইলেকশন কমিশন উন্নত ফর্মুলেশন তৈরি করতে বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান এবং নির্মাতাদের সাথে সহযোগিতা করছে যা কালি চিহ্ন মুছে ফেলার প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করে। এর ফলে কালির মধ্যে অতিবেগুনী রশ্মীর ব্যবহার (UV), হলোগ্রাফিক ইফেক্টস, বা অন্যান্য রাসায়নিক প্রতিক্রিয়াগুলির মতো উপাদানগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে যা কালির সত্যতা প্রমাণ করতে পারে।